অনেক অনেক দিন আগের কথা। এখনকার মতো তখনো আমাজন বিশাল নদী ছিলো। নদী তীরবর্তী এলাকা ছিলো বন জঙ্গলে পরিপূর্ণ। সেই জঙ্গলের পাশেই বাস করতো রেড ইন্ডিয়ানদের এক গোত্র। সেই গোত্রে ছিলো এক অপূর্ব সুন্দরী মেয়ে। আশে পাশের গোত্রে তার মতো সুন্দরী কেউ ছিলো না।
এক পূর্নিমার রাতে আকাশের দিকে তাকিয়ে সেই মেয়েটি খুব মুগ্ধ হয়ে গেলো। চাঁদের অপরূপ রপে যেনো সে মাতোয়ারা। বাবাকে মেয়েটি জিজ্ঞেস করলো, চাঁদে কে থাকে? রেড ইন্ডিয়ানদের এক প্রাচীন বিশ্বাসমতে, তার বাবা জানালো, চাঁদ হচ্ছে এক অসম্ভব সুন্দর এবং শক্তিশালী যুদ্ধ-দেবতার বাসস্থান।
যতই সময় যেতে লাগলো মেয়েটির মনে এই বিশ্বাস ততোই গাঢ় হতে লাগলো। এক সময় মেয়েটি চাঁদের এই রহস্যময়ী যুদ্ধ দেবতার প্রেমে পড়ে গেলো। তার সারাটি সময় যেনো কাটে চাঁদের যুদ্ধ দেবতার কথা চিন্তা করে। এদিকে একদিন তার বিয়ের বয়স হলো। আশে পাশের গোত্র থেকে অনেক সুদর্শন যুবক, এমনকি অনেক গোত্রপতিও বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এলেন। মেয়েটির বাবা, মা, আত্মীয় স্বজন সবারই পাত্র খুব পছন্দ হয়, কিন্তু মেয়েটি কিছুতেই কারো সাথে বিয়েতে রাজী হয় না। বাবা- মা অনেক করে বোঝাতেন, কিন্তু কোনো চেষ্টায়ই সাফল্য পেলো না। মেয়ের একটি মাত্র কথা, সে বিয়ে করবে চাঁদের যুদ্ধ দেবতাকেই।
মেয়েটির বাবা বললেন, আগের দিনের রেড ইন্ডিয়ানরা খুব বোকা রকমের ছিলো। নিজেরা অনেক কিছু কল্পনা করে নিতো। চাঁদের যুদ্ধ দেবতাও এই রকম এক কল্পনার দেবতা। বাস্তবে এর কোনো অস্তিত্বই নেই। মেয়েটি সেই কথা কানেই তুললো না। প্রতি পূর্নিমার রাতে সে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতো, কখন চাঁদ পুরোপুরি গোল হবে, কখন চাঁদের যুদ্ধ দেবতাকে দেখা যাবে!
চাঁদ যখন পুরোপুরি গোল হতো, মেয়েটি চাঁদের আলোকে জড়িয়ে ধরতো। এমনকি চাঁদের রেখাকে জড়িয়ে ধরার জন্য সে আলোর পিছনে পিছনে জঙ্গলেও ঢুকে যেতো। সে অনুভব করতো আলোর রেখাকে জড়িয়ে ধরার মাধ্যমে যেনো যুদ্ধ দেবতাকেই ভালোবেসে জড়িয়ে ধরছে। এমনি এক পূর্নিমার রাতে চাঁদের আলো রেখাকে জড়িয়ে ধরার জন্য মেয়েটি ছুটতে লাগলো। ছুটতে ছুটতে কখন যে আমাজনের পাড়ে চলে এলো, খেয়ালই করেনি। এর আগে মেয়েটি কখনই আমাজনের কাছে আসে নি।
কৌতূহল নিয়ে আমাজনের দিকে তাকালো। সেই সময়ে আমাজনের পানি ছিলো খুবই স্বচ্ছ, আজকের যুগের মতো ঘোলাটে নয়। সেই স্বচ্ছ পানিতে মেয়েটি তাকিয়ে দেখলো পূর্নিমার চাঁদকে! মেয়েটি যেনো অবশেষে তাঁর চাঁদের যুদ্ধ দেবতাকে পেলো! যেনো চাঁদের যুদ্ধ দেবতা মেয়েটির ভালোবাসায় সাড়া দিয়ে এই আমাজনের বুকে নেমে এলো। সেই চাঁদকে আর চাঁদের যুদ্ধ দেবতাকে ভালোবাসার বন্ধনে আটকে রাখার জন্য, জড়িয়ে ধরার জন্য কোনো কিছুই চিন্তা না করে মেয়েটি লাফ দিলো আমাজনের বুকে!
ভালোবাসার প্রতীক সেই হতভাগ্য রেড ইন্ডিয়ান মেয়েটি সাঁতার জানতো না। ভালোবাসতে গিয়ে, ভালোবাসার মানুষকে পেতে গিয়ে মেয়েটি চিরতরে হারিয়ে গেলো আমাজনের নীল পানির গভীরে।
চাঁদে কিন্তু এক যুদ্ধ দেবতা ঠিকই ছিলো। আগেকার দিনের রেড ইন্ডিয়ানদের প্রাচীন বিশ্বাস সত্যই ছিলো। চাঁদ থেকে সেই অসম্ভব এবং শক্তিশালী যুদ্ধ দেবতা সব কিছুই দেখলেন। অনুভব করলেন মেয়েটির ভালোবাসার প্রবল শক্তিকে। চাঁদের সেই যুদ্ধ দেবতা চাইলেন মেয়েটিকে ফিরিয়ে আনতে এই পৃথিবীতে। কিন্তু দেবতাদের রাজা চাঁদের দেবতাকে মৃত্যুকে জীবিত করার ক্ষমতা দিলেন না। আশাহত চাঁদ দেবতা তার সর্বশ্রেষ্ঠ ক্ষমতা প্রয়োগ করে মেয়েটিকে আমাজনের বুকে এক বিশাল ফুলে পরিণত করলেন, যা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জলজ ফুল। এভাবেই সেই দিন থেকে আমাজনে ওয়াটার লিলির জন্ম, যে ফুলটাকে আমরা এখনকার যুগে বলি ওয়াটার লিলি, ভিটোরিয়া রেজিয়া প্রজাতি, যে ফুল একমাত্র প্রতি পূর্নিমার রাতেই পরিপূর্ণভাবে প্রস্ফুটিত হয়। যেনো আমাদেরকে জানিয়ে দেয় সেই রেড ইন্ডিয়ান মেয়েটি আর তার ভালোবাসার চাঁদের যুদ্ধ দেবতার কথা।
এক পূর্নিমার রাতে আকাশের দিকে তাকিয়ে সেই মেয়েটি খুব মুগ্ধ হয়ে গেলো। চাঁদের অপরূপ রপে যেনো সে মাতোয়ারা। বাবাকে মেয়েটি জিজ্ঞেস করলো, চাঁদে কে থাকে? রেড ইন্ডিয়ানদের এক প্রাচীন বিশ্বাসমতে, তার বাবা জানালো, চাঁদ হচ্ছে এক অসম্ভব সুন্দর এবং শক্তিশালী যুদ্ধ-দেবতার বাসস্থান।
যতই সময় যেতে লাগলো মেয়েটির মনে এই বিশ্বাস ততোই গাঢ় হতে লাগলো। এক সময় মেয়েটি চাঁদের এই রহস্যময়ী যুদ্ধ দেবতার প্রেমে পড়ে গেলো। তার সারাটি সময় যেনো কাটে চাঁদের যুদ্ধ দেবতার কথা চিন্তা করে। এদিকে একদিন তার বিয়ের বয়স হলো। আশে পাশের গোত্র থেকে অনেক সুদর্শন যুবক, এমনকি অনেক গোত্রপতিও বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এলেন। মেয়েটির বাবা, মা, আত্মীয় স্বজন সবারই পাত্র খুব পছন্দ হয়, কিন্তু মেয়েটি কিছুতেই কারো সাথে বিয়েতে রাজী হয় না। বাবা- মা অনেক করে বোঝাতেন, কিন্তু কোনো চেষ্টায়ই সাফল্য পেলো না। মেয়ের একটি মাত্র কথা, সে বিয়ে করবে চাঁদের যুদ্ধ দেবতাকেই।
মেয়েটির বাবা বললেন, আগের দিনের রেড ইন্ডিয়ানরা খুব বোকা রকমের ছিলো। নিজেরা অনেক কিছু কল্পনা করে নিতো। চাঁদের যুদ্ধ দেবতাও এই রকম এক কল্পনার দেবতা। বাস্তবে এর কোনো অস্তিত্বই নেই। মেয়েটি সেই কথা কানেই তুললো না। প্রতি পূর্নিমার রাতে সে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতো, কখন চাঁদ পুরোপুরি গোল হবে, কখন চাঁদের যুদ্ধ দেবতাকে দেখা যাবে!
চাঁদ যখন পুরোপুরি গোল হতো, মেয়েটি চাঁদের আলোকে জড়িয়ে ধরতো। এমনকি চাঁদের রেখাকে জড়িয়ে ধরার জন্য সে আলোর পিছনে পিছনে জঙ্গলেও ঢুকে যেতো। সে অনুভব করতো আলোর রেখাকে জড়িয়ে ধরার মাধ্যমে যেনো যুদ্ধ দেবতাকেই ভালোবেসে জড়িয়ে ধরছে। এমনি এক পূর্নিমার রাতে চাঁদের আলো রেখাকে জড়িয়ে ধরার জন্য মেয়েটি ছুটতে লাগলো। ছুটতে ছুটতে কখন যে আমাজনের পাড়ে চলে এলো, খেয়ালই করেনি। এর আগে মেয়েটি কখনই আমাজনের কাছে আসে নি।
কৌতূহল নিয়ে আমাজনের দিকে তাকালো। সেই সময়ে আমাজনের পানি ছিলো খুবই স্বচ্ছ, আজকের যুগের মতো ঘোলাটে নয়। সেই স্বচ্ছ পানিতে মেয়েটি তাকিয়ে দেখলো পূর্নিমার চাঁদকে! মেয়েটি যেনো অবশেষে তাঁর চাঁদের যুদ্ধ দেবতাকে পেলো! যেনো চাঁদের যুদ্ধ দেবতা মেয়েটির ভালোবাসায় সাড়া দিয়ে এই আমাজনের বুকে নেমে এলো। সেই চাঁদকে আর চাঁদের যুদ্ধ দেবতাকে ভালোবাসার বন্ধনে আটকে রাখার জন্য, জড়িয়ে ধরার জন্য কোনো কিছুই চিন্তা না করে মেয়েটি লাফ দিলো আমাজনের বুকে!
ভালোবাসার প্রতীক সেই হতভাগ্য রেড ইন্ডিয়ান মেয়েটি সাঁতার জানতো না। ভালোবাসতে গিয়ে, ভালোবাসার মানুষকে পেতে গিয়ে মেয়েটি চিরতরে হারিয়ে গেলো আমাজনের নীল পানির গভীরে।
চাঁদে কিন্তু এক যুদ্ধ দেবতা ঠিকই ছিলো। আগেকার দিনের রেড ইন্ডিয়ানদের প্রাচীন বিশ্বাস সত্যই ছিলো। চাঁদ থেকে সেই অসম্ভব এবং শক্তিশালী যুদ্ধ দেবতা সব কিছুই দেখলেন। অনুভব করলেন মেয়েটির ভালোবাসার প্রবল শক্তিকে। চাঁদের সেই যুদ্ধ দেবতা চাইলেন মেয়েটিকে ফিরিয়ে আনতে এই পৃথিবীতে। কিন্তু দেবতাদের রাজা চাঁদের দেবতাকে মৃত্যুকে জীবিত করার ক্ষমতা দিলেন না। আশাহত চাঁদ দেবতা তার সর্বশ্রেষ্ঠ ক্ষমতা প্রয়োগ করে মেয়েটিকে আমাজনের বুকে এক বিশাল ফুলে পরিণত করলেন, যা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জলজ ফুল। এভাবেই সেই দিন থেকে আমাজনে ওয়াটার লিলির জন্ম, যে ফুলটাকে আমরা এখনকার যুগে বলি ওয়াটার লিলি, ভিটোরিয়া রেজিয়া প্রজাতি, যে ফুল একমাত্র প্রতি পূর্নিমার রাতেই পরিপূর্ণভাবে প্রস্ফুটিত হয়। যেনো আমাদেরকে জানিয়ে দেয় সেই রেড ইন্ডিয়ান মেয়েটি আর তার ভালোবাসার চাঁদের যুদ্ধ দেবতার কথা।
Tags
গল্পের আসর