"মুলাদী উপজেলা পরিচিতি"

       








"আমাদের মুলাদী উপজেলা পরিচিত”
মুলাদী বাংলাদেশের একটি উপজেলার নাম। মুলাদী উপজেলার পূর্বের নাম “শাহগঞ্জ”। মুলাদী উপজেলার অবস্থান(স্থানাঙ্ক) ২২.৯১৫৩º উত্তর এবং ৯০.৪১৫০º পূর্ব। মুলাদী উপজেলার পরিবেশ খুবই সুন্দর ও সাজানো-গোছানো। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তার সারা অঙ্গে অঙ্গে ছড়ানো। নদীমাতৃক এই দেশের এই মুলাদী উপজেলার ভিতর দিয়ে নদী গুলি যেন শিরা উপশিরা হয়ে বয়ে গেছে তার সারা শরীরে। ৭টি ইউনিয়নের এই উপজেলার মুলাদী পৌরসভা হচ্চে ১ম শ্রেণির পৌরসভা। প্রশাসনিক এলাকা মুলাদী পৌরসভা, নাজিরপুর, বাটামারা, গাছূয়া, চরকালেখা, ছবিপুর, সেলিমপুর ও কাজিরচর ইউনিয়ন। বাংলাদেশের নামকরা ২ টি বন্দর(হাট) এর মধ্যে মুলাদী বন্দর অন্যতম। মুলাদী উপজেলা চত্বর দীঘি ও মুলাদীর নয়া ভাঙ্গা নদীর উপর নির্মীত একমাত্র হিজলা-মুলাদী সংযোগ ড. আব্দুর রাজ্জাক(ভুলু) সেতু দৃষ্টি নন্দন স্থান। বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর এই মুলাদী উপজেলার ২০১৪ ইং সনের শ্রেষ্ঠ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মুলাদী এম.জে পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় অধ্যায়ন করেন।


আন্তর্জাতিক মাতৃ ভাষা দিবসের জন্য লেখা সেই বিখ্যাত গান ‍‍”আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো ২১ ফেব্রুয়ারি” এর সুরকার ও শিল্পী শহীদ বুদ্ধীজীবী আলতাফ মাহমুদের বাড়ী এখানে। তিনি ১৪ ই ডিসেম্বর পাকহানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ হন। তার নামে উপজেলার প্রাণ কেন্দ্রে একটি অডিটেরিয়াম রয়েছে । বাংলাদেশের বরিশাল বিভাগের বরিশাল জেলার অর্ন্তগত মুলাদী উপজেলা। ১৯৬৭ সালে মুলাদী থানা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৩ সালে মুলাদী উপজেলা প্রতিষ্ঠিত হয়। মুলাদী উপজেলার উত্তরে গোসাইরহাট, দক্ষিণে বাবুগঞ্জ, পূর্বে হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জ, পশ্চিমে গৌরনদী ও কালকিনি। মুলাদী উপজেলার আয়তন ২৬১.০২ বর্গকিলোমিটার। মুলাদী উপজেলায় ইউনিয়ন ৭ টি, মৌজা ৯৮ টি, গ্রাম ১১০ টি। মুলাদী উপজেলায় লোকসংখ্যা ২,১৭,৪৪৮ জন। যার মধ্যে পুরুষ ৫০.৪৯% এবং মহিলা ৪৯.৫১%। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতিবর্গ কিলোমিটারে ৬৬১ জন । এই উপজেলায় মোট ঘরের সংখ্যা ৩৮,৩৪৮ টি। মুলাদী উপজেলার মোট জনসংখ্যার ৯৭.৮৯% লোক মুসলমান, ২.১৬% হিন্দু এবং ০.০৫ লোক অন্যান্য ধর্ম অবলম্বী। বাংলাদেশে বরিশাল জেলায় শিক্ষার হার বেশি আর বরিশাল জেলায় মুলাদীতে শিক্ষার হার সবচেয়ে বেশি ৮১.২৬%। মুলাদী উপজেলায় কলেজ ৮টি যথা মুলাদী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, চরকালেখান বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, আরিফ মাহমুদ কলেজ, পূর্ব হোসনাবাদ মহাবিদ্যালয়, মুলাদী টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ, মুলাদী মহিলা কলেজ, নাজিরপুর ইউনাইটেড কলেজ, রহমানিয়া টেকনিক্যাল কলেজ, সৈয়দ হাজী বদরুল কলেজ। এদের মধ্যে প্রথম তিনটি ডিগ্রী কলেজ এবং পূর্ব হোসনাবাদ মহাবিদ্যালয় ডিগ্রী অনুমোদনের অপেক্ষায় হয়ত ২০১৪/১৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি অনুমোদন পাবে। এদের মধ্যে মুলাদী টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজে কৃষি ডিপ্লোমা চালু আছে। মুলাদীতে ২ টি কারিগরি বোর্ড অনুমদিত কম্পিটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে ১ টি মুলাদী টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের নামে যদিও এটা এখন চালু নাই অপরটি মুলাদী টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার যেইটা চালু আছে। মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩২ টি, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১২৯ টি,মাদ্রাসা ১৭ টি, কে,জি স্বুল ৬ টি। মুলাদী উপজেলার মানুষের মাঝে ধর্মীয় কুসংস্কার কম থাকায় এখানের সব ধর্মের মানুষ সুখে-শান্তিতে একত্রে বসবাস করছে। মুলাদী উপজেলায় ৪৪০ টি মসজিদ আছ। তাই এই উপজেলাকে মসজিদের উপজেলা ও বলা যেতে পারে। এছাড়া ও ১৮ টি মন্দির ও ১ টি গির্জা আছে। মুলাদী থানায় ২৮ টি ক্লাব রয়েছে।এদের মধ্যে উল্লেখ যোগ্য নবীন সংঘ, তরুন সংঘ, নবজাগরণ সংঘ ও বয়েস ক্লাব ইত্যাদি। মুলাদীতে পাবলিক লাইব্রেরি আছে ৪ টি। সিনেমা হল ১ ট (বন্ধ প্রায়)। থিয়েটার গ্রুপ ৩ টি। সংগীত বিদ্যালয় ১ টি।  মুলাদী উপজেলায় চাষাবাদ যোগ্য জমি ২৬১৫৯.৪৫ হেক্টর এবং পতিত জমির পরিমান ২৩৭.৫৬ হেক্টর। মোট লোক সংখ্যার ২৯% লোক ভূমিহীন। ভূমিহীনতার কারণ নদী ভাঙ্গন। মুলাদী উপজেলায় নদী গুলো হল আঁড়িয়াল খা, জয়ন্তী, ছইলা, মেঘনা ও নয়া ভাঙ্গা নদী। এই উপজেলায় মাছের খামার আছে ৬৩ টি, মুরগির খামার ৩৮ টি, গরুর খামার ১১ টি। মুলাদী উপজেলার মানুষ মোটামুটি সাস্থ্য সচেতন হওয়ার পর ও ২,১৭,৪৪৮ জন মানুষের সাস্থ্য সেবা বেশ হুমকির মুখে। মুলাদী উপজেলায় আছে মুলাদী উপজেলা সাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ২টি বেসরকারী ক্লিনিক। মুলাদী উপজেলা সাস্থ্য কমপ্লেক্স একদম জরাজীর্ন অবস্থা যদিও অচিরেই উন্নয়ন মূলক কাজ শুরু হচ্ছে। ইউনিয়ন সাব-সেন্টার ৩টি, ৭টি ইউনিয়ন সাস্থ্য সেন্টার ও ১৬ টি কমিউনিটি ক্লিনিক আছে।
মুলাদী উপজেলায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থাকা সত্ত্বে ও সবাই সহাবস্থায় চলে সুখে-শান্তিতে বসবাস করছে। দুই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া তেমন কোন সমস্যা নাই এখানে। বর্তমান তরুন নেতৃত্ব আমাদের এই  মুলাদী উপজেলাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে অনেক দূর। আমাদের মুলাদী জয়ন্তী নদীর বাঁধ যেন আমাদের আর বাকি ৫ টি উইনিয়নকে যুক্ত করেছে। মুলাদীর সাথে যাতায়াত ব্যবস্থা করেছে সহজ। মুলাদী  প্রতি সোমবার বসে বিরাট হাট। যেখানে একসাথে ক্রয়-বিক্রয় হয় সবার প্রয়োজনীয় সব কিছু। এই বাজারে পাওয়া যায়না এমন জিনিস খুব দুস্কর। দেশের দূর-দুরন্ত থেকে খদ্দের আসে ক্রয়-বিক্রয় করতে। মুলাদী উপজেলার মানুষ খুবই বন্ধু সুলভ এবং অতিথিপরায়ণ। আতিয়থায় তাদের জুরি নাই। আশাকরি সামনের দিন গুলো আরো সুন্দর হবে আমাদের। এই কামনা সকল মুলাদী বাসীর।
এডমিন
মো৪ বনি আমিন

Post a Comment

Previous Post Next Post